সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে দেশে ইন্টারনেট সেবায় বিঘ্ন ঘটে। ধীরগতির পর বন্ধ করে দেওয়া হয় মোবাইল ইন্টারনেট এবং ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। এমন পরিস্থিতিতে দেশে ভিপিএনের ব্যবহার বেড়েছে।
ভিপিএন (প্রাইভেট ভার্চুয়াল নেটওয়ার্ক) ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কারণ এটি ব্যবহারকারীর অনলাইন কার্যকলাপকে সুরক্ষিত করে এবং গোপনীয়তা রক্ষা করে। তবে, ভিপিএন ব্যবহারে কিছু ক্ষতির দিকও রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরি।
ভিপিএন সেবাদাতার সততার ওপর নির্ভর করে ব্যবহারকারীর তথ্যের নিরাপত্তা। ভিপিএন ব্যবহারে ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হওয়ার ঝুঁকি থাকে, কারণ ব্যবহারকারীর ডেটা ভিপিএন সেবাদাতার হাত দিয়ে যায়।
ভিপিএন ব্যবহারের একটি সাধারণ অসুবিধা হলো ইন্টারনেট সংযোগের গতি কমে যাওয়া। ভিপিএন বিভিন্ন দুর্গম সার্ভারের মধ্য দিয়ে ডেটা পাঠায় এবং ডেটা ট্রান্সমিশন এনক্রিপ্ট করে, ফলে ব্রাউজিংয়ের সময় কম গতি ও বিলম্বের মতো অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে পারেন ব্যবহারকারী।
ভিপিএনের প্রাথমিক উদ্দেশ্য ব্যবহারকারীর পরিচয় গোপন রাখা। তবে, কোনো কারণে ব্যবহারকারীর ক্রেডেনশিয়াল বা পরিচয় শনাক্তকরণ তথ্যাদি হ্যাকারের হাতে চলে গেলে, হ্যাকিং অনেক সহজ হয়ে যায়।
ভিপিএন সেটআপ বা কনফিগার করা অনভিজ্ঞ ব্যবহারকারীর কাছে ভীতিকর হতে পারে। এনক্রিপশন প্রোটোকল, সার্ভার বাছাই, এবং টানেলিং আলাদা করার মতো বিভিন্ন উন্নত ফিচার ব্যবহারের ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দিতে পারে। এছাড়া, ইন্টারনেট সংযোগে ট্রাবলশুটিং, ডিএনএস ফাঁস, অথবা নির্দিষ্ট কিছু অ্যাপ্লিকেশন বা ডিভাইস সেটআপের ক্ষেত্রে কারিগরি বিশেষজ্ঞের প্রয়োজন হতে পারে।
অনেক ভিপিএন সেবা বিনা মূল্যে বা কম খরচে পাওয়া যায়। তবে, প্রিমিয়াম ভিপিএন সেবাগুলোয় উন্নত ফিচার ও উচ্চগতির সার্ভার ব্যবহারের সুবিধা পাওয়া যায়, যা তুলনামূলক ব্যয়বহুল।
বিভিন্ন ভিপিএন সেবায় সত্যিকারের প্রাইভেসি ও নিরাপত্তা সুবিধার কথা উল্লেখ থাকলেও কিছু ক্ষেত্রে এগুলো অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার হওয়ার ঝুঁকি থাকে। ভিপিএন সেবাদাতার সততার ওপর নির্ভর করে ব্যবহারকারীর তথ্য নিরাপত্তা।
ভিপিএন ব্যবহার করার আগে সেবাদাতার বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করা উচিত। বিশ্বস্ত ও প্রিমিয়াম সেবা প্রদানকারীদের নির্বাচন করা বাঞ্ছনীয়, যারা ব্যবহারকারীর তথ্য সুরক্ষার জন্য পরিচিত। এছাড়া, ইন্টারনেট গতি ও নিরাপত্তার বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে উপযুক্ত ভিপিএন সেবা নির্বাচন করা উচিত।
ভিপিএন সেবা ব্যবহারে সুবিধার পাশাপাশি ঝুঁকিগুলোর ব্যাপারে সচেতন থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যেন ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত থাকে এবং অনলাইন কার্যকলাপ নিরাপদে পরিচালিত হয়।